মদ্যন্তিকার এক ভাই ছিল নন্দন। সে একজন মধ্যবয়সী বিধবা ছিল। সে একবার মালতীকে দেখে ছিল আর তখন থেকে ই সে মালতীকে ভালোবাসে। সে খুব ভাল করেই জানতো যে সে কখনও মালতীর মন জয় করতে পারবে না। সে একজন দরবারী এবং খুব চালাক মানুষ ও ছিল। সে রাজার কাছে গিয়ে মালতিকে তাঁর স্ত্রী বানানোর জন্য সাহায্য চেলো। রাজা খুব সোজা ছিলেন এবং তিনি নন্দনকে পছন্দ ও করতেন। তিনি তাকে কথা দিলেন যে তার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য সাহায্য করবেন।
রাজা একদিন ভুরিভাসু — মালতীর বাবাকে- তার মেয়ের বিয়ে নন্দনের সাথে করার কথা বললেন। ভুরিভাসু চান নি যে তাঁর মেয়ে নন্দনের মতো কোনও বৃদ্ধের সাথে বিয়ে করুক। কিন্তু তিনি এমনকি বিরোধিতা করে রাজাকে ক্রুদ্ধ করতে চাননি। তাই রাজাকে রাগ না করে তিনি বললেন যে মেয়ের উপরে বাবার অধিকার থাকে। রাজা এটিকে মালতীর বাবার সম্মতি হিসাবে নিলেন আর মালতী ও নন্দনের বাগদানের ঘোষণা করে দিলেন।
মালতী এবং মাধবের এই কথা খুব খারাপ লাগলো। তারা ভাবলো যে এটি তাদের সুখ এবং আশাগুলির শেষ। মালতীর একটি বন্ধু লবঙ্গীকা তাদের সাথে ছিল। সে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করল এবং বলল যে ভগবতী কামন্দকি তাদের জন্য কোন না কোনো উপায় অবশ্যই খুঁজে বার করবেন। লবঙ্গীকা আশ্বস্ত করল যে ভগবতী কামন্দকি ভুরিভাসু বা রাজাকেও বলতে পারেন যে এই বিবাহ সুখী হবে না। মালতীর নিজের পরিবারের দিকে অনেক টান ছিল।
সে বলল , “আমার সৌম্য বাবা এবং কুলিং মা ও আমার পবিত্র পরিবার সকলেই আমায় খুব প্রিয়। আমি কীভাবে তাদের সকলকে প্রতিবাদ করতে পারি ?? "এখন একটাই উপায় আছে যে আমি নিজের জীবন শেষ করে দি"
সেই সাথে ভগবতী কামন্দকি সেখানে পৌঁছেছিলেন। তিনিও রাজার ঘোষণা শুনেছিলেন।
তিনি মালতী ও মাধবকে বললেন, “বাচ্চারা, ভুরিভাসুরের উপর এমন কোনও বিধিনিষেধ নেই যে তাঁর মালতীর বিয়ে নন্দনের সাথেই করতে হবে। তিনি কখনই এই প্রস্তাবটির সাথে সম্মত হননি। তিনি এ জাতীয় উত্তর বিয়েটা এড়ানোর জন্যে দিয়েছিলেন।
লবঙ্গীকা বলল, “ভগবতী, আপনি ঠিক বলেছেন। রাজাও কীভাবে বৃদ্ধ পুরুষ কে ছোট মালতীর উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক মনে করলেন ?? ভগবতী, আপনি ই মালতীকে এই অবমাননার পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে পারবেন।
"ভাগ্যক্রমে বা ভুরিভাসুর দক্ষতায় এই পরিস্থিতি এড়ানো যেতে পারে," ভগবতী কামন্দকি বললেন।
তখন তিনি বললেন, "এর আগে ও এমন উদাহরণের অভাব নেই যখন শেষ পর্যন্ত সত্য ভালবাসা বিজয়ী হয়। শকুন্তলার উদাহরণটাই ধরুন - তিনি কন্বর স্বীকৃতি ছাড়াই রাজা দুশ্যান্তকে চুপচাপ বিয়ে করল। রুক্মিনী শ্রী কৃষ্ণের সাথে পালিয়েযাবা , ভাসবদত্তর উদয়নকে আত্মসমর্পণ করা, তবে আমি বুঝতে পারছি না যে মালতীকে এ জাতীয় পরামর্শ দেওয়া ঠিক হবে কি না। তারপরে আমাকে মাধবের সম্পর্কেও ভাবতে হবে। সে দেবব্রতের পুত্র। সে বড় মানুষ এবং বিদর্ভের রাজার মন্ত্রী। তাঁর খ্যাতিতে আজ পর্যন্ত কোনো কলঙ্ক লাগে নি। ভুরিভাসু এবং দেবব্রত দুজনেই এক সাথে পড়াশোনা করেছে। তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মাধব তাঁর একমাত্র ছেলে। সে শিক্ষিত ও সুদর্শন। সে এখানে পদ্মাবতীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। এখানকার মহিলারা তাকে শুধুমাত্র দেখার জন্যেই একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতে থাকে।"